বাংলাদেশী শিক্ষা উদ্যোক্তা আয়মান সাদিকের সফলতার গল্প

আয়মান সাদিক হচ্ছেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষা উদ্যোক্তা এবং ইন্টারনেট ব্যক্তিত্ব। তিনি ২০১৫ সালে ১০ মিনিট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটা এমন এক প্রতিষ্ঠান; যা অনলাইনে শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য এবং সহযোগীতা বিনামুল্যে দিয়ে থাকে। এই প্রতিষ্ঠান শ্রোতাদের (যারা এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে) জন্য দুই সহস্রাধিক ভিডিও তৈরী করেছে। এই প্রতিষ্ঠান মুলত ইংরেজি, গণিত এবং বিজ্ঞানের নানা বিষয় যা একাডেমিক সিলেবাসের আওতাভুক্ত এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর দক্ষতা কিভাবে বাড়ানো যায়; তা নিয়ে ভিডিও তৈরী করে।আয়মান সাদিক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-র ছাত্র। বিত্তবান পরিবারের সন্তান, পড়ানো যার নেশা।
আয়মান সাদিক এর ব্যক্তিগত জীবন এবং শিক্ষা
আয়মান সাদিক কুমিল্লার একটি মুসলিম পরিবারের সন্তান। তার বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তায়েব বাংলাদেশ পেশাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এবং মা শারমিন আক্তার গৃহিনী। আয়মান চট্টগ্রামের ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এণ্ড কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। তিনি উচ্চমাধ্যমিকে অধ্যয়ন করেছেন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এণ্ড কলেজে। আয়মান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন থেকে বিবিএ (ব্যচেলর অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন) তে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
আয়মান সাদিক এর ক্যারিয়ার
আয়মান শিক্ষা ও প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেন। “তাঁর দশ মিনিট স্কুল” এসএসসি, এইচএসসি এবং বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটগুলিতে কীভাবে ভর্তি পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করা যায় সে সম্পর্কে একটি অনলাইন স্কুল, তার উপর ভিডিও লেকচার শ্রোতাদের জন্য তৈরী করা হয়। পড়াতেন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিংয়ে। দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আঙ্গিনায় পা রাখার জন্য পথ বাতলে দিতেন নতুনদের।যে লোককে সাহায্য করার জন্য ধ্যান করে, তার মন অল্প কষ্টে কাঁদে। যার গল্পটি আমি বলছি সেও প্রকৃতির। তিনি ভর্তি কোচিংয়ে ক্লাস করতে গিয়ে আবিষ্কার করেছিলেন যে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আছেন যারা টাকার অভাবে ভর্তি কোচিং করতে পারছেন না। অনেকের কাছে বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক বাধা ও কোচিংয়ের জন্য ঢাকায় আসা অনেকের কাছে স্বপ্নের মতো।
নিজের পড়াশোনা এবং শিক্ষকতা ছাড়াও এই শিক্ষার্থীদের কাছে কীভাবে পৌঁছানো যায় সে সম্পর্কে তিনি চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন। একদিন বন্ধুদের সাথে একসাথে হঠাৎ ফেসবুকের লাইভ ভিডিও বৈশিষ্ট্যটি ব্যবহার করে তিনি একটি ক্লাস নেন। আমি সেদিন প্রচুর সাড়া পেয়েছি! তার উদ্বেগের সমাধান পেয়েছেন! হ্যাঁ, লাইভ ভিডিওতেই তিনি সব শিক্ষার্থীদের পড়ানোর প্ল্যাটফর্ম বানিয়ে নিজের চিন্তার সমাধান পেয়ে গেলেন।
আয়মান সাদিক শুরু করলেন ‘টেন মিনিট স্কুল’। শিক্ষার্থীরা এখন ঘরে বসেই ক্লাস করছে। শুধু কি বিশ্ববিদ্যালয় কোচিং, এখন তো প্রাইমারী লেভেল থেকে শুরু করে প্রোফেশনাল – সব রকমের শিক্ষার্থীদের জন্য কোর্স রয়েছে সেখানে। এই ভার্চুয়াল ক্লাসরুমগুলো সত্যিই যেন এক আনন্দ পাঠশালা। সুচিন্তা ও তার বাস্তবায়নের ফসল হিসেবে অল্প সময়েই পেয়েছেন অনেক সরকারী-বেসরকারী পুরষ্কার। সম্প্রতি ব্রিটেনের রানির কাছ থেকে রানির তরুণ নেতাদের পুরষ্কার পেয়েছেন। আয়মান সাদিকের মতো একমাত্র যুবকই বাংলাদেশের ভবিষ্যত আলোকিত করতে সক্ষম হবেন। দেশ ও দেশের জনগণের সহায়তার স্বপ্ন দেখেন এমন সব তরুণ-তরুণীর জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ‘ছোটবেলায় আমি পোকেমন মাস্টার হতে চেয়েছিলাম’- আয়মান সাদিক ‘Great minds discuss ideas; average minds discuss events; small minds discuss people’
‘এলেনুর রোজভেল্ট’-এর এই উক্তিটা মানুষটার অনেক প্রিয়। আয়মান সাদিক প্রথম যখন উক্তিটি শুনেছিলেন, তার কাছে মনে হলো কেউ যেন তাকে কষে থাপ্পড় মারলো। আসলেই তো, সারাদিন দশ ঘন্টা কথা বললে আমরা নয় ঘন্টা মানুষকে নিয়েই তো কথা বলি। কেউ ফর্সা হলে বলি, ময়দা মেখে আসছে। কালো হলে বলি, এহ আসছে একটা ক্ষেত! এটি যদি বাদামি হয় তবে আমি বলি, এটি সবার মতোই সাধারণ, আলাদা কিছু নেই। আমরা কী করি বা কীভাবে করি তা লোকেরা কথা বলবে না! তিনি তখন ভাবলেন, যদি স্মল মাইন্ড না হয়ে গ্রেট মাইন্ড হতে পারেন তাহলে কত অসাধারণ ব্যাপার হতো। কত নতুন নতুন আইডিয়া বের হয়ে আসতো।
তিনি ভাবাভাবির মধ্যে ব্যাপারটা রাখলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষেই চিন্তা করলেন একটি আইডিয়া। ঢাকার মানুষজন অনেক সুবিধা পায়। ঘরের কাছে কোচিং, ঘরের কাছে সব। কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রামের একটা ছেলে জানে না কীভাবে সে বিশ্ব বিদ্যালয়ের জন্য পড়বে। ফার্মগেটের মোড়ে এডমিশন সিজনে কত নতুন মুখ আসে প্রতি বছর। যারা অর্থের অভাবে আসতে পারে না তারা আবার ভালো গাইডলাইন থেকেও বঞ্চিত হয়। এই প্রতিবন্ধকতাটা দূর করা যায় খুব সহজেই। ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তিনি নিজে সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ডের ছাত্র হয়ে যখন হিসাববিজ্ঞান কোর্সের ১৭টা অধ্যায় নিজে নিজে ইন্টারনেট ঘেঁটে শিখে ফেলেছিলেন, তখনই ভাবলেন কেমন হয় যদি এই কাজটাই আমরা আমাদের ছাত্রছাত্রীদের জন্য করি!
মানুষটা সম্পর্কে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক একটি লাইভ ভিডিওতে বলেন, ‘আমি নতুন করে একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছি। টেন মিনিট স্কুল। শিক্ষক আমার সামনে দাঁড়িয়ে।’ তিনি আয়মান সাদিক। গ্রেট মাইন্ড কিছু তরুণদের সাথে নিয়ে বিনামূল্যে অনলাইনেই ১ম শ্রেণী থেকে বিসিএস , স্কিল ডেভেলপমেন্ট থেকে অনুপ্রেরণার ভিডিও ছড়িয়ে দেন। এগিয়েচলোডটকম-এ টেন মিনিট স্কুলের উদ্যোক্তা আয়মান সাদিক মুখোমুখি হয়েছেন ১০ টি প্রশ্নের-
১. আয়মান সাদিক নিজেই আয়মান সাদিক হতে পারতেন না কি ছাড়া ?
-আশে পাশের মানুষগুলোর অসম্ভব ভালো মানসিকতা। আর সবসময় সাহায্য করার মানসিকতা। তাদের ছাড়া আসলে আয়মান সাদিক আয়মান সাদিক হতে পারতো না।
২. “বিহাইন্ড এভরি আয়মান সাদিক দেয়ার ইজ আ স্টোরি অব স্ট্রাগল”। এমন কোনো গল্প কি আছে আয়মান ভাইয়ার জীবনে?
-আমার জীবনে স্ট্রাগল আলহামদুলিল্লাহ অনেক কম করতে হয়েছে। কিন্তু তারপরও যদি বলতে হয় একটা ঘটনা বলি। টেন মিনিট স্কুল এর ওয়েবসাইট যখন বানানোর যখন উদ্যোগ নেয়া হয়, তারপরে আমরা একটি ওয়েব বিকাশকারী সংস্থায় যাই। অগ্রিম টাকাও দেই। ওয়েবসাইটটি তৈরি করতে তাদের ছয় মাস লেগেছিল এবং শেষ পর্যন্ত তারা মূলত আমাদের কিছুই দেয়নি। আমি যখন একটি বিশাল ধাক্কা পেয়েছিলাম।কারণ স্টুডেন্ট ছিলাম। টাকা পয়শাও বেশি নাই। টিউশন করে জমানো টাকা পুরোটাই চলে যায়। কিন্তু কাজ হলো না। এরপর আরো একটা ফার্মে আমরা যাই। তিন মাস সময় চায় ওরা। এবার হাফ পেমেন্ট করি। ওরাও কিছুই করতে পারে না। নিজেরা কাজ পারতাম না,তাই ওয়েবসাইট শুরু করার আগে তাদের দিয়ে কাজ করতে গিয়ে দুইবার ধাক্কা খেলাম।
৩. আমরা নিজেরা অনেক সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখি। আবার আমরাই হাল ছেড়ে দেই। সবাইকে বলে বেড়াই, পরিবার আমাদের সাপোর্ট দেয় না-
– সত্যি কথা বলতে পরিবার আমাদের ভালো চায়। তুমি যদি গান করতে চাও, নাচ করতে চাও তার তোমাকে নিরুৎসাহিত করতে পারে। তারা ভাবে গানের ইন্ডাস্ট্রিতে তুমি সফল নাও হতে পারো, নাচের ইন্ড্রাস্ট্রিতে তুমি সফল নাও হতে পারো। তারা চায় এমন কিছু তুমি করো যেন তোমার পরে যেয়ে কষ্ট না করতে হয়, তোমার জীবন যেনো গুছানো হয়, স্টেবল হয়। কিন্তু তুমি তোমার প্যাশনকে যেভাবে অনুভব করো পৃথিবীর অন্য কেউ সেভাবে অনুভব করবে না। তাই তুমি যদি পরিবারকে পটাতে চাও আগে তাদের বুঝাতে হবে তুমি যা করছো এটা করে তোমাকে দুর্দশার মধ্যে থাকতে হবে না। কিংবা তুমি যদি ফেইলও করো তুমি সেটা সামলে নিতে পারবে।
৪. পরিবার কিন্তু পাশের বাড়িরআন্টিদের কথার বেশ গুরুত্ব দেয়। পাশের বাড়ির ছেলের উদাহরণ শুনিয়ে তাদের মতো হতে বলা হয়। এই পাশের বাড়ির আন্টিদের মুখ থেকে “ফুল চন্দন পড়ুক” ধরণের প্রশংসা কি করে আদায় করা যেতে পারে- আমার জন্য খুব সিম্পল। আন্টিদের সাথে যখনই দেখা হয় তখনই তাদের বলি-আসসালামুয়ালাইকুম আন্টি, কেমন আছেন, আপনার ছেলে কেমন আছে? একটা জিনিস খেয়াল করেছি। সুন্দর করে হেসে কথা বললে আসলে কাজ হয়ে যায়। আমরা যদি সুন্দর করে একটু হেসে কথা বলি শুধু এই হাসি দিয়েই অনেকের মন জয় করা যায়। তখন উলটা তারা বলে,”আয়মানের মতো হও। দেখো কি ভদ্র ছেলেটা। একটা সালাম, একটা হাসিমুখ,এইটুকুই দরকার।
৫. অনেকে অতিরিক্ত চাপে হতাশ হন। প্রত্যেকে জিপিএ ফাইভ চায়, আমরা গল্পের বই পড়তে চাই। প্রত্যেকেই একটি ভাল স্কুল বা কলেজে ভর্তি হতে চায়, আমরা কিছু ভাল অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ করতে চাই। অনেকে তো আত্মহত্যা করার মতো সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলে-টু বিন ভেরি অনেস্ট, আমাদের ইয়াং জেনারেশন অনেক ডিপ্রেসড। তারা অনেক বেশি ফ্রাস্ট্রেটেড। তার কারণ হলো, তাদেরকে ছোট বেলায় বলা হয়েছে তোমার যা খুশি সেটাই হতে পারবে। আবার তাদের বলা হয়েছে তোমাদের ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে। তাদের বলা হয়েছে স্বপ্নের পিছে দৌড়াতে আবার তারা যখন গান করতে চায়, নাচ করতে চায় তখন তাদের বলা হয় এইসব কি ! সমাজ কি বলবে। এর ফলে যেটা হয় তারা যা কল্পনা করে আসে, ভেবে আসে তার সাথে বাস্তবতার মিল খুঁজে পায় না। সো তুমি যদি বাস্তবতাটাকে বুঝে প্ল্যানিং করে গুছিয়ে কাজ করতে পারো তাহলে আর বেশি হতাশ হতে হবে না।
৬.এখনকার ছেলেমেয়েদের অনেকেই রিলেশনশীপ নিয়ে দ্বিধাগ্রস্থ থাকে। এটাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে অন্যান্য বিষয়ে অমনোযোগী হয়ে যায়- আচ্ছা আমি না রিলেশনশীপের ব্যাপারে খুবই কাঁচা। আমার লাইফে কখনো রিলেশনশীপ ছিল না। তো এই ব্যাপারে আমি খুব একটা ভালো সাজেশন দিতে পারবো না। আমার কাছে মনে হয় ছাত্রজীবনে প্রেম বিষয়ক ব্যাপার স্যাপারে না জড়ানোই বেটার। এটা অনেকটা তিন পায়া রেসের মতো। দুইজন দৌড়ায়। মাঝখানের পা বাঁধা থাকে। তুমি একা যত জোরে দৌড়াতে পারবে, দুইজন মিলে পা বাঁধা অবস্থায় জীবনেও এত জোরে দৌড়াতে পারবে না।
৭. আমরা সকলেই জীবনের বড় একটা সময় “লোকে কি বলবে?” সিন্ড্রোমে ভুগি। ইন্ট্রোভার্ট মানুষদের মধ্যে এই প্রবণতা খুবই বেশি। এই সিন্ড্রোম থেকে মুক্তি পেতে কি করা যেতে পারে? সিম্পল। গাধার গল্পটা শুনেছো? স্বামী-স্ত্রী গাধায় চড়েছিলেন। লোকেরা বলতে লাগল, এই পাথর কি? এমন শুকনো নোংরা গাধা অসুবিধায় চড়েছে। লোকটি নেমে গেল। তখন কিছু লোক বলল, এই লোকটি বোকা, সে তার স্ত্রীকে গাধার উপরে চড়ায় এবং নিজেই হাঁটতে থাকে। এবার তাঁর স্ত্রীও নেমে গেলেন। সে গাধার পিঠে উঠল। তখন লোকেরা বলল, দেখুন কত খারাপ! সে তার গাধা চড়ে স্ত্রীকে নিয়ে হাঁটছে। তারা এবার দুইজনই নেমে গাধার পাশে হাঁটতে লাগলো। তারপর লোকে বললো, এরা গাধা নাকি! গাধায় না চড়ে গাধা নিয়ে হাঁটে। এর মানে হচ্ছে মানুষ সবসময় কিছু না কিছু বলবেই। তাই বলে নিজেকে যদি একটা গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ রাখো, অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হও তাহলে ভালো কিছু করতে পারবে না।
৮. সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এর অপব্যবহার নিয়ে প্রচুর কথা হচ্ছে আজকাল। কাজের চেয়ে “এটেনশন সিকিং”-ই বেশি চোখে পড়ে।অপব্যবহার থেকে বের হয়ে সময়টা কি কাজে ব্যবহার করলে সেটা ইফেক্টিভ হবে আপনার ধারণা?
-আমার খুব ফেবারিট তিনটা আইডিয়া আছে। ১. ফেসবুকের বায়োতে নিজের রক্তের গ্রুপ দিয়ে দাও। তাহলে কত মানুষ তোমার ইনফরমেশন থেকে উপকৃত হবে। ২. ইউনিভার্সিটি লাইফে সবার নিজের ব্যাচ এর ফেসবুক গ্রুপ থাকে। অনেকে তোমার কাছে পড়া বুঝতে আসে না? কিন্তু চিন্তা করে দেখো তুমি যদি এক্সাম এর আগের দিন লাইভে যেয়ে পড়া বুঝিয়ে দাও তাহলে এক সাথে কত বন্ধুরা হেল্প পাবে ! ৩. তুমি ক্রিয়েটিভ কাজ পারো। ইভেন্ট ওরগানাইজ করতে চাও। এই কাজটা খুব সহজে চাইলে ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে করতে পারো। চাইলে তুমি ওয়ার্কশপ সেমিনার এর আয়োজনও করতে পারো।এই সামান্য বৈশিষ্ট্যটি ব্যবহার করা অনেকের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। আপনার যা দরকার তা হ’ল পরিবর্তনের মানসিকতা।
৯. পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বনাম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা চাকরি বনাম উদ্যোক্তা এই যে আমাদের মধ্যে সব বিষয়ে দুইটা পক্ষ তৈরি করার প্রবণতা। কেউ নিজেকে নিয়ে তৃপ্ত না। সবার কাছে রাস্তার ওই পাড়ের বিলবোর্ডকেই বেশি সুন্দর মনে হয়। এই মানসিকতা থেকে বের হওয়া দরকার আমাদের।
-হ্যাঁ, এগুলো নিয়ে অনেক ডিবেট হয়। দুই পক্ষ যতদিন না একসাথে মিলে কাজ করতে পারবে ততদিন দেশের উন্নতি হবে না সোজা কথা। যারা চাকরি করে তারা উদ্যোক্তাদের যদি বলে এদের দিয়ে কিছু হবে না তাহলে কি কোনো লাভ হবে? আবার উদ্যোক্তারা যদি বলে এরা চাকরি করে নটা-পাঁচটা, গাধার মতো খাটে তাহলেও সমস্যা। আমাদের উচিৎ মূলত একে অন্যকে সহযোগিতা করা।
১০. “ফর্মুলা কিন্তু একটাই”-সেই ভিডিও থেকে আজকের আয়মান সাদিক। অনেকেই এখন আয়মান সাদিকের মতো শিক্ষক হতে চায়, পাবলিক স্পিকার হতে চায়। বিনয়ী হতে চায়। উদ্যোক্তা হতে চায়। তারা আসলে কোন ফর্মুলা অনুসরণ করবে?
– নাহ নাহ। আমি এত কিছু নই। আমি জাস্ট সামান্য একজন স্কুল মাস্টার। ছোটবেলায় আমি পোকেমন মাস্টার হতে চেয়েছিলাম। এখন স্কুল মাস্টার হয়ে গিয়েছি। আমার কাছে মনে হয় আমাদের সবার প্রচুর স্বপ্ন থাকে। কিন্তু সমাজের বাঁধা ধরা নিয়মে পড়ে ওগুলোতে পা বাড়াতে ভয় পাই। একটু সাহস করে পা বাড়িয়ে দেখো। বিশেষ করে তুমি যখন স্টুডেন্ট লাইফে আছো তখন পা বাড়াও। তাহলে কি হবে জানো? তুমি যদি ফেইলও করো , সেই ফেইলার থেকে উঠে আসার সুযোগ পাবে। কারণ, এখন তোমার পারিবারিক ঝামেলা নেই, তোমার একটা বউ নেই, বাচ্চা পালার চিন্তা নেই। আয়মান সাদিক বলবো স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই স্বপ্নের পিছনে দৌড়াতে শুরু করো। ইন্ডিপেন্ডেন্ট হওয়া শুরু করো। কিছু করতে হবে এইসব না বলে জাস্ট কাজ শুরু করে দাও। আয়মান সাদিক কি, দেখবে একদিন আয়মান সাদিক থেকেও অনেক বড় কিছু হয়ে যেতে পারবে।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
3,911FollowersFollow
0SubscribersSubscribe

Latest Articles